সুন্দরবন ভ্রমণ কেন করবেন?

সুন্দরবন ভ্রমণ কেন করবেন?  

সুন্দরবন,  যা বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিস্তৃত একটি বৈচিত্র্যময় স্থান । এটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল। যদি আপনার  প্রকৃতির সৌন্দর্য, বন্যপ্রাণী এবং নদীমাতৃক পরিবেশের প্রতি  আগ্রহ থাকে তাহলে সুন্দরবন ভ্রমণ হতে পারে আপনার জন্য এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা নাম।

কেন সুন্দরবন  ভ্রমণ করা উচিত ?

১. বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণী: সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও হরিণ, কুমির, লোনা পানির কচ্ছপ, বানর, উটপাখির মতো অসংখ্য প্রাণী দেখতে পাবেন।
২. দুর্লভ পাখিদের অভয়ারণ্য: এটি বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ এবং অভিবাসী পাখির বাসস্থান। বিশেষত, কালো মাথার মাছরাঙা, শঙ্খচিল এবং সাদা বক এখানে সাধারণভাবে দেখা যায়।
৩. অবাক করা নদী ও খাল: সুন্দরবনের অসংখ্য নদী ও খালের জলযাত্রা আপনাকে প্রকৃতির এক নতুন রূপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে।
৪. ম্যানগ্রোভের রহস্যময় সৌন্দর্য: গরান, গোলপাতা, গেওয়া, সুন্দরী গাছের সারি আর তাদের শিকড়ের বিস্তৃত জাল আপনাকে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবে।


কিভাবে যাবেন সুন্দরবন?

*ঢাকা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার উপায়:

১. ঢাকা → খুলনা → মংলা → সুন্দরবন:

  • ঢাকা থেকে খুলনা যাওয়ার জন্য ট্রেন, লঞ্চ বা বাস পাওয়া যায়।
  • খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত বাস বা গাড়িতে যেতে পারেন।
  • মংলা থেকে সুন্দরবনগামী বিভিন্ন  জাহাজ, ট্রলার, বোট ও ট্যুর অপারেটরের ব্যবস্থা আছে।

২. ঢাকা → বরগুনা → সুন্দরবন:

  • ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার জন্য লঞ্চ বা বাস নিতে পারেন।
  • বরগুনা থেকে সুন্দরবনে সরাসরি প্রবেশের ব্যবস্থা আছে।

সুন্দরবনে দর্শনীয় স্থান

১. কটকা ও কচিখালী অভয়ারণ্য:

কটকা পয়েন্ট সুন্দরবনের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের এর অভয়ারণ্য। এখানে কিছু মিষ্টি পানির পুকুর আছে। যেখানে বাঘ পানি থেকে আসে। এছাড়া রয়েছে জামতলা নামক বিশাল সমুদ্র সৈকত, যা আপনার সমুদ্র দর্শনের তৃপ্তি মেটাবে।

২. দুবলার চর:

প্রতিবছর কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে এখানে রাস পূর্ণিমার মেলা হয়, যেখানে প্রচুর সন্ন্যাসী ও পর্যটক ভিড় করেন। বাংলাদেশের শুটকি শিল্পের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদন এলাকা হচ্ছে দুবলার চর।

৩. হিরণ পয়েন্ট:

এটি সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এখানে বন্যপ্রাণী দেখা এবং নিবিড়  পরিবেশে সুন্দরবন এর প্রকৃতি উপভোগ করতে পারবেন।এখানে রয়েছে  আসল বাঘের কঙ্কাল।

৪. নীলকমল পয়েন্ট :

এটিও একটি  পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে সুন্দরবনের হরিন, বানর সহ বিভিন্ন বণ্যপ্রাণী দর্শনের মাধ্যমে  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করার  যায়।

সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস…

*ট্যুর অপারেটর বেছে নিন: সুন্দরবন ঘুরতে হলে ভালো রিভিউযুক্ত ট্যুর অপারেটরের সাহায্য নিন। সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য এটি অত্যাবশ্যকীয়।

*লাইফ জ্যাকেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন: নৌভ্রমণের সময় সতর্ক থাকতে হবে।

*সঠিক সময় নির্বাচন করুন: অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময় সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

*বন্যপ্রাণীর প্রতি সচেতন থাকুন: কোনো প্রাণীকে বিরক্ত করা বা খাবার দেওয়া নিষেধ। আর বণ্যপ্রাণী হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

*পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন: প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলে সুন্দরবনের প্রকৃতিকে নষ্ট করবেন না।

 

সুন্দরবন শুধু একটি বন নয়, এটি প্রকৃতির এক অপূর্ব বিস্ময় এবং বাংলাদেশের গর্ব। সুন্দরবনের শ্বাসমূল বন, বন্যপ্রাণী, আর নদী-খাল ভ্রমণ আপনাকে প্রকৃতির সঙ্গে এক অবিস্মরণীয় সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনি যদি এডভেঞ্চার ও প্রকৃতি প্রেমি হোন, তাহলে সুন্দরবন হবে আপনার অন্যতম সেরা গন্তব্য।

# সুন্দরবন ভ্রমণ

#সুন্দরবন ভ্রমণে করণীয়

#ম্যানগ্রোভ বন ভ্রমণ

#সুন্দরবনের আকর্ষন

Share this content: