রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণের একদিন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণের একদিন…
বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও সৌন্দর্যমণ্ডিত ক্যাম্পাস হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। উন্মুক্ত ও বিস্তৃত প্রাঙ্গন, সবুজেঘেরা প্রকৃতি, ইতিহাসের ছোঁয়া আর শিক্ষার মনোরম পরিবেশ যা ‘রাবি‘কে করে তুলেছে অনন্য। যারা শিক্ষা, প্রকৃতি ও ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ ভালোবাসেন, তাদের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণ একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হতে পারে।
যাত্রা শুরু: কীভাবে যাবেন?
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণের জন্য আপনি বিভিন্ন উপায়ে যেতে পারেন:
*বাসে: ঢাকা থেকে রাজশাহী সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। গ্রীন লাইন, শ্যামলী, হানিফ, দেশ ট্রাভেলসসহ বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস নির্ভরযোগ্য ও সহজলভ্য । ভাড়া ৮০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
*ট্রেনে: ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজশাহী যাওয়া যায়। ট্রেনভ্রমণ আরামদায়ক ও খরচ তুলনামূলক কম।
*ফ্লাইটে: যারা দ্রুত যাতায়াত করতে চান, তারা বিমানে রাজশাহী যেতে পারেন। তবে তা ব্যায়বহুল।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ
রাজশাহী শহর থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য বাস, রিকশা ও সিএনজি সহজলভ্য। মূল গেট পেরোলেই মনোমুগ্ধকর ক্যাম্পাস, গাছপালা ও খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনাকে স্বাগত জানাবে।
দর্শনীয় স্থানসমূহ.
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি প্রকৃতি ও ইতিহাসের এক অপরূপ মেলবন্ধন। কিছু প্রধান দর্শনীয় স্থান:
- শহীদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবন: ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত প্রশাসনিক ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় এর নাম ফলক। রাবির ক্যাম্পাস জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন স্মৃতি স্তম্ভ ও মিনার।
- শিক্ষাভবন ও বিভাগীয় ভবনসমূহ: আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহ্যের মিশেলে নির্মিত ভবনগুলো বড়ই নান্দনিক ও স্মৃতি বিজড়িত। এখানে রয়েছে গ্রান্থাগার, মসজিদ,খেলার স্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন বড় বড় স্থাপনা।
- প্যারিস রোড: ক্যাম্পাসের ভিতরে আকাশমণি গাছের সারিতে তৈরি রাস্তা বিখ্যাত ও সুপরিচিত প্যারিস রোড নামে।
- বোটানিক্যাল গার্ডেন: প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি দারুণ এক স্থান, যেখানে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির গাছপালার সমারোহ।
- রাবি জাদুঘর: ১৯৬৯ গনঅভ্যুত্থানের শহীদ ডঃ শামসুজ্জ্বোহা স্যারের স্মৃতি বিজড়িত এই জাদুঘর।
- মতিহারের চত্বর: শিক্ষার্থীদের আড্ডার প্রাণকেন্দ্র, যেখানে ক্যাম্পাসের প্রকৃতি উপভোগ করা যায়।
- বরেন্দ্র জাদুঘর : ১৯০৭ সালে নির্মিত বরেন্দ্র জাদুঘর রাজশাহী অঞ্চলের সংস্কৃতির নিবিড় অংশ। রাবি ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে ঘুরতে পারেন বরেন্দ্র জাদুঘরে।
*খাবারের প্রধান আকর্ষনঃ
রাবিতে ঘুরতে এসে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী খাবার না খেলে ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে। ক্যাম্পাসের আশপাশে সুস্বাদু খাবারের অনেক অপশন রয়েছে:
- রাজশাহীর বিখ্যাত আম: যদি গ্রীষ্মকালে যান, তাহলে রাজশাহীর আম অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।
- শীতকালীন পিঠাঃ শীতকালে রাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে জমে ওঠে পিঠা পুলির মেলা। ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা, পাশাপাশি বিভিন্ন মজাদার পিঠা পায়েসের স্বাদ নিতে ভুলবেন না একদম।
- বিখ্যাত কালাইরুটি : ক্যাম্পাসের আশে পাশে পেয়ে যাবেন রাজশাহীর বিখ্যাত কালাইরুটি আর বেগুন ভর্তা।সাথে নিতে পারেন হাঁসের মাংস।
- এছাড়া ক্যাম্পাসে পেয়ে যাবেন ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি সহ নানা মুখোরচক খাবারের সমারোহ।
*রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি প্রকৃতি ও ইতিহাসের এক অন্যতম মেলবন্ধন । যারা পড়াশোনার পাশাপাশি দারুণ একটি ক্যাম্পাস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য রাবি হতে পারে এক আদর্শ গন্তব্য। যদি সময় পান, তাহলে একদিনের জন্য হলেও এই শিক্ষাঙ্গনে ঘুরে আসতে পারেন, স্মৃতি রয়ে যাবে আজীবন।
#রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
#রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিন
#রাবিতে ভ্রমণ
#রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণ
Share this content: